চোখ লাফানোর অভিজ্ঞতা আমাদের সকলের জীবনেই একবার না একবার হয়েছে। এর কারণ সম্পর্কে যাওয়ার আগে জানাই যে, চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই চোখ লাফানোর একটি ভালো প্রতিশব্দ আছে – myokymia।
এই চোখ লাফানো নিয়ে আমরা যতই লাফালাফি করি না কেন, ডান চোখ আর বা চোখ লাফানোর সাথে দিন ভালো মন্দ হওয়ার যতই যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করি না কেন, বিশ্বাস করুন এর পিছনের আসল কারণ সঠিক ভাবে এখনও জানা যায়নি। তবে হ্যাঁ, পর্যবেক্ষণের ওপর ভিত্তি করে দেখা গেছে কিছু কিছু কারণ বা বলা ভালো কিছু বিশেষ অবস্থায় এই myokymia এর সমস্যা বেশি দেখা যায়।
এলার্জি:
ডাস্ট অ্যালার্জির মত সমস্যা থাকলে অথবা hayfever এ আক্রান্ত হলে চোখ লাফানোর এই ঘটনা মাঝে মাঝে আপনার সাথে ঘটতে পারে।
ক্যাফেইন:
ব্যস্ত দিনে একটু বেশি কাপ espresso কিন্তু myokymia এর মত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। সোডা বা অতিরিক্ত চা, কফি বা ক্যাফেইন যুক্ত যে কোনো পানীয় অত্যধিক মাত্রায় শরীরে প্রবেশ করলে তা আমাদের স্নায়ু তন্ত্রের ওপর প্রভাব ফেলে যার বহিঃপ্রকাশ হিসাবে myokymia ঘটতে পারে।
ডিজিটাল আই স্ট্রেন বা কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম:
অনেক সময় ধরে স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে কাজ করার ফলে চোখে অতিরিক্ত প্রেসার পরে।এর ফলে চোখ ড্রাই বা শুষ্ক হয়ে যায় যা myokymia এর অন্যতম কারণ। তাই আপনি যদি বর্তমানে work from home এর দৌলতে বেশিরভাগ সময় ল্যপটপ চোখে বসে থাকেন তাহলে মাঝে মাঝে সাময়িক বিরতি নিয়ে চোখকে রেস্ট দিন এবং ঘন ঘন চোখের পাতা ফেলুন।
Fatigue বা ক্লান্তি এবং নিদ্রাহীনতা:
সারাদিন অত্যধিক পরিশ্রমের পরে রাতে ভালো ঘুম না হলে তার থেকেও জন্ম নিতে পারে myokymia। বাল্টিমোরের mercy medical centre এর চিকিৎসক জেনিফার কে পাইপারের মতে,
Fatigue means that your muscles aren’t getting enough nutrients… being low in vitamin D or magnesium can [lead to] difficulty with relaxing one’s muscles, so they kind of tense up or twitch.
পুষ্টির অভাব:
কিছু গবেষণা বলছে যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি nutrients এর অভাবে চোখ লাফাতে পারে, যার মধ্যে অন্যতম হলো ম্যাগনেশিয়াম। যদিও এ ব্যাপারে গবেষণার অবকাশ আছে, তবুও এ কথা বলা যায় যে, প্রাত্যহিক খাবারের মধ্যে বিশেষ কিছু মৌলের অভাব myokymia এর অন্যতম একটি কারণ।
অতিরিক্ত মদ্যপান:
অতিরিক্ত অ্যালকোহল ড্রাই আইজেএকটি কারণ। এছাড়াও অ্যালকোহল থেকে চোখের নানান রকম সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে যার থেকে জন্ম নেয় myokymia।
এই সমস্ত ফ্যাক্টরের সাথে সাথে ইমোশনাল স্ট্রেস, চোখের কোনো ইনফেকশন বা ইরিটেশন, উজ্জ্বল আলো এমনকি আবহাওয়াও চোখ লাফানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে।
উপরে উল্লিখিত কারণগুলো থেকে যে myokymia জন্ম নেয় তা সাধারণত মাইনর আই টুইচ (minor eye twitch)। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ধরনের টুইচ গুরুতর কিছু নয় এবং ক্ষতিকারকও নয়, তবে নিঃসন্দেহে অস্বস্তির উদ্রেক ঘটায়।
Benign essential blepharospasm:
এই ক্ষেত্রে চোখ অস্বাভাবিক এবং বেশি মাত্রায় লাফায় কিন্তু প্রাণনাশক নয়। ড্রাই আই বা Tourette’s syndrome[2] এর কারণে অনেক সময় এই রোগের সূত্রপাত ঘটে।
Hemifacial spasm:
এ ক্ষেত্রে শুধুমাত্র চোখই নয়, মুখের একপাশ পর্যন্ত কাঁপতে থাকে। অনেক সময় এই রোগে আক্রান্ত রোগী ঠিকমত খাবার খেতে এবং কথা বলতে পর্যন্ত পারে না। ফেসিয়াল নার্ভের ইনফ্লামেশনের ফলে অথবা আরও জটিল কোনো নার্ভের রোগের ফলে এই স্পাসম সৃষ্টি হতে পারে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।